ভুলের মধ্য দিয়ে কীভাবে সত্যকে পাওয়া যায়?

সঠিক উত্তর :
ভুল স্বীকার করে
অপশন ১ : বারবার ভুল করে
অপশন ২ : ভুল স্বীকার করে
অপশন ৩ : ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে
অপশন ৪ : ভুল চেপে রেখে

বর্ণনা: ভুলের মধ্য দিয়ে গিয়েই তবে সত্যকে পাওয়া যায়। কোনো ভুল করছি বুঝতে পারলেই আমি প্রাণ খুলে তা স্বীকার করে নেব। কিন্তু না বুঝেও নয়, ভয়েও নয়। ভুল করছি বা করেছি বুঝেও শুধু জেদের খাতিরে বা গোঁ বজায় রাখবার জন্যে ভুলটাকে ধরে থাকব না। তাহলে আমার আগুন সেই দিনই নিভে যাবে। একমাত্র মিথ্যার জলই এই শিখাকে নিভাতে পারবে। তাছাড়া কেউ নিবাতে পারবে না।মানুষ-ধর্মই সবচেয়ে বড় ধর্ম। হিন্দু-মুসলমানের মিলনের অন্তরায় বা ফাঁকি কোনখানে তা দেখিয়ে দিয়ে এর গলদ দূর করা আমার এ পথের অন্যতম উদ্দেশ্য। মানুষে মানুষে যেখানে প্রাণের মিল, আদত সত্যের মিল, সেখানে ধর্মের বৈষম্য, কোনো হিংসার দুশমনির ভাব আনে না। যার নিজের ধর্মে বিশ্বাস আছে, যে নিজের ধর্মের সত্যকে চিনেছে, সে কখনো অন্য ধর্মকে ঘৃণা করতে পারে না। দেশের পক্ষে যা মঙ্গলকর বা সত্য, শুধু তাই লক্ষ্য করে এই আগুনের ঝান্ডা দুলিয়ে পথে বাহির হলাম।আমার পথ প্রবন্ধে কাজী নজরুল ইসলাম এমন এক আমির আগমন প্রত্যাশা করেছেন যার পথ সত্যের পথ, সত্য প্রকাশে তিনি নির্ভীক, অসংকোচ। তিনি প্রতিটি মানুষকে পূর্ণ আমি করতে চেয়েছেন, আর এভাবে প্রত্যেককে সংযোগ করে আমরা হয়ে উঠতে চেয়েছেন। তাঁর এ ভাবনা সত্যপথের পথিকদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চেয়েছেন। নজরুলের এই আমি সত্তা মিথ্যার ভয়কে জয় করে সত্যের আদলে নিজেকে চিনে নিতে সাহায্য করে। নজরুল বলেছেন সুস্পষ্টভাবে নিজের বিশ্বাস আর সত্যকে প্রকাশ করতে না জানলে তৈরি হয় পরনির্ভরতা। কবি ভগ্ন আত্মাবিশ্বাসের পরিবর্তে দাম্ভিক হতে চান। কারণ তাঁর বিশ্বাস সত্যের দম্ভ যাদের আছে তাদের জন্য অসাধ্য সাধন করা কঠিন কাজ নয়। তিনি ভুল করতে রাজি আছেন, কিন্তু ভণ্ডামি করতে রাজি নন। তাঁর কাছে নিজেকে জানাই হল সত্যকে জানা, আর এই সত্যকে জানার মাধ্যমে মানুষ দাঁড়াতে পারে তার অস্তিত্বের ভিত্তিমূলে। নজরুল বলেছেন, মানুষের মাঝে মনুষ্যত্ববোধ জাগ্রত করতে পারলেই ধর্মের প্রকৃত সত্য উন্মোচিত হবে, এক ধর্মের সঙ্গে অন্য ধর্মের বিরোধ মিটে যাবে। সমগ্র মানব সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করার মূল শক্তি হলো সম্প্রীতি।

আরও পড়ুন