ভাষা আন্দোলন রচনা

ভাষা আন্দোলন বাংলা ভাষার রাষ্ট্রীয় মর্যাদার দাবিতে সংগঠিত গণআন্দোলন। ১৯৪৭ সালে উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটে এবং ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়। স্বাধীনতার পরপরই পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা কি হবে এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়। ১৯৪৮ সালের মার্চ মাসে পাকিস্তানের তদানীন্তন গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ঘোষণা করেন যে, উর্দু এবং কেবলমাত্র উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা। বাংলাদেশের দেশপ্রেমী জনগণ এটাকে তাদের সংস্কৃতির ওপর চরম আঘাত হিসেবে ধরে নেয়। এই ঘোষণা থেকে ভাষা আন্দোলনের বীজ বপন করে। ছাত্রসমাজ এবং রাজনৈতিক সচেতন ব্যক্তিরা এর বিরুদ্ধে কড়া প্রতিবাদ জানান। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলন কমিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পূর্ব পাকিস্তানের পার্লামেন্ট ভবনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। পূর্ব পাকিস্তান সরকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও পার্লামেন্ট ভবন এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে। পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্ররা এ আদেশ অমান্য করে এগিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ গুলি চালায়। ফলে বরকত, রফিক, সালাম, জব্বার ও আরো অনেকের রক্তে ঢাকার রাজপথ রঞ্জিত হয়। পরদিন আহুত ধর্মঘট সারা পূর্ব-পাকিস্তান অচল করে দেয়। অবশেষে পাকিস্তানি শাসকবর্গ বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়। বাংলাদেশ ২১ ফেব্রুয়ারি শহিদ দিবস হিসেবে পালন করে। ১৭ নভেম্বর, ১৯৯৯ ইউনেস্কো একুশে ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসাবে ঘোষণা করে।

আরও পড়ুন