বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল বা বঙ্গবন্ধু টানেল বা বঙ্গবন্ধু সুড়ঙ্গ বা কর্ণফুলী সুড়ঙ্গ হল কর্ণফুলী নদীর নিচে অবস্থিত নির্মাণাধীন সড়ক সুড়ঙ্গ। এই সুড়ঙ্গটি কর্ণফুলী নদীর দুই তীরের অঞ্চলকে যুক্ত করবে। এই সুড়ঙ্গেন মধ্য দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক যুক্ত হবে।এই টানেল চট্টগ্রামের পতেঙ্গার সঙ্গে আনোয়ারার সংযোগ স্থাপন করেছে। কর্ণফুলি নদী চট্টগ্রামকে দুই ভাগে ভাগ করেছে। এই নদীর ওপর তিনটি সেতু রয়েছে। কাছেই সমুদ্রবন্দর হওয়ায় এসব সেতুতে গাড়ির চাপ অনেক বেশি থাকে। তাছাড়া প্রচুর পলিমাটি জমার কারণে এই নদীতে নতুন করে সেতু নির্মাণ নদীর জন্য ক্ষতিকর। তাই নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল নির্মাণ করলে এসব সমস্যার সমাধান হবে। এছাড়া এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বৈশ্বিক যোগাযোগেও ভূমিকা রাখবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল ।২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিন পিং প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল নির্মাণের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। বহুল প্রত্যাশিত এই টানেলটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে ৪ হাজার ৪৬১ কোটি ২৩ লাখ টাকা। অবশিষ্ট ৫ হাজার ৯১৩ কোটি ১৯ লাখ টাকা ২ শতাংশ সুদহারে দিচ্ছে চীনের এক্সিম ব্যাংক। চীনা প্রতিষ্ঠান চায়না কমিউনিকেশন এন্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি (সিসিসিসি) লিমিটেড এই প্রকল্পের কাজ পেয়েছে। টানেলের মোট দৈর্ঘ্য ৯ দশমিক ৩৯ কিলোমিটার। এর মধ্যে মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। টানেলে থাকবে ১০ দশমিক ৮০ মিটার ব্যাসের দুটি টিউব। একমুখী চলাচল উপযোগী প্রতিটি টিউবে দুই লেনের সড়ক থাকবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের মাধ্যমে বৈশ্বিক যোগাযোগে যুক্ত হওয়ায় দেশের সড়ক ব্যবস্থায় উন্নয়ন সাধিত হবে। এছাড়া কর্ণফুলি নদীর পূর্ব পাশে স্থাপি শিল্প এলাকায় শিল্পকারখানার পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে শিল্পোন্নয়ন ও রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও এ টানেলের মাধ্যমে বন্দর থেকে শিল্পের কাঁচামাল পরিবহণ সহজ হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল সড় যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক মাইলফলক। শিল্পোন্নয়ন, পর্যটন শিল্পের বিকাশ এবং সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থায় এ টানেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে ।