শ্রমের মর্যাদা রচনা ক্লাস ১০

বেঁচে থাকার জন্যে প্রতিটি মানুষকে জীবনযুদ্ধের সম্মুখীন হতে হয় এবং জীবনযুদ্ধে জয়ী হওয়ার প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে পরিশ্রম। জীবনের লক্ষ্য অর্জনের জন্যে মানুষকে কর্মমুখর জীবন কাটাতে হয়। হাদিস শরিফে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি নিজের জন্যে কিংবা পরের জন্যে পরিশ্রম করতে চায় না, সে আল্লাহর পুরস্কার থেকে বঞ্চিত। মানবজীবনের যে উৎকর্ষ সাধিত হচ্ছে এবং মানব সভ্যতার যে বিকাশ ঘটছে তাতে শ্রমদানের গুরুত্ব অপরিসীম। মানুষ শ্রম দেয় বলেই সভ্যতার চাকা ঘোরে। কিন্তু শ্রমের গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে তার মর্যাদা পর্যালােচনা করলে পরিস্থিতি খুবই নৈরাশ্যজনক মনে হয়। মানুষে মানুষে হাজারাে ব্যবধান সৃষ্টি হয়েছে শ্রমের পরিপ্রেক্ষিতে। সবাই এক ধরনের শ্রম দেয় না বলে তাদের মর্যাদায় রয়েছে ভিন্নতা। যারা তথাকথিত নিচু স্তরে কাজ করে তাদের মর্যাদা নেই। তারা সমাজের দৃষ্টিতে হেয় এবং অবহেলিত। আর যারা সে কাজ করে তাদের শ্রমের পরিমাণ কম হলেও তারা বেশি সুবিধাভােগী। তারা সমাজের ও দেশের কর্ণধার। তাদের মর্যাদা অনেক বেশি। ফলে শ্রমবিমুখতা এখন জাতীয় জীবনে প্রকট হয়ে ওঠেছে। শ্রমের মর্যাদা স্বীকৃত না হওয়ার ফলেই এই জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের দেশে কায়িক শ্রমকে মর্যাদাহীন বলে বিবেচনা করা হয় বলে শ্রমের প্রতি প্রায় সবারই একটা বিমুখতা রয়েছে। এটা ব্যক্তি ও জাতীয় জীবনের উন্নতির জন্যে ক্ষতিকর। কিন্তু পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি। পরিশ্রম ছাড়া কোনাে কিছুই সফল হয় না। কৃষক, শ্রমিক, কামার, কুমার, জেলে, মজুর এ ধরনের পেশার লােকেরা যদি কর্মবিমুখ হয়ে পড়ে তাহলে জাতি মুখ থুবড়ে পড়বে। তাই এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়ে মানুষের শ্রমের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে এবং প্রতিষ্ঠিত করতে হবে শ্রমের মর্যাদা।

আরও পড়ুন