প্রতিবেদন রচনা

তারিখ: ০২/০৬/২০২৪
বরাবর
অধ্যক্ষ,
বিএম সরকারি কলেজ,
কুমিল্লা।
বিষয়: কলেজের ছাত্রাবাস সমস্যার ওপর প্রতিবেদন।
সূত্র: আদেশ নং- বরিসক, ১৮/১৮
মহোদয়,
আপনার আদেশক্রমে (আদেশ নং- রংসক, ১৮/১৮; ১৭/০৫/২৪) সুষ্ঠু তথ্য প্রদান করে বিএম মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস সমস্যা সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন নিচে উপস্থাপন করছি।
১. দীর্ঘদিন ধরে কলেজের ছাত্রাবাসটির সংস্কারের অভাবে ছাত্রাবাসের ১৯, ২১ ও ২৭ নম্বর কক্ষ বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। দ্বিতীয় তলার ২৭ নম্বর থেকে ৩১ নম্বর পর্যন্ত কক্ষের ছাদ জরাজীর্ণ। উল্লিখিত কক্ষগুলোকে কর্তৃপক্ষ পরিত্যক্ত ঘোষণা করার পরও শিক্ষার্থীরা নিরুপায় হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে থাকতে বাধ্য হচ্ছে।
২. কলেজ ছাত্রাবাসে সিট সংখ্যা কম থাকার কারণে একই রুমে যেখানে দুজন ছাত্র থাকার কথা সেখানে তিন-চার জন করে থাকছে। এতে পড়ার পরিবেশ যেমন বিঘ্নিত হচ্ছে, তেমনি ছাত্রাবাসেও বিরুদ্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে।
৩. সম্প্রতি কলেজে অনার্স কোর্স চালু করায় ছাত্রাবাস সমস্যাটি আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। ইতোমধ্যে কয়েকজন উচ্ছৃঙ্খল ছাত্র কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই ছাত্রাবাসের কয়েকটি কক্ষ দখল করে নিয়েছে। শুধু দখলই নয়, এসব রুমে এখন নিয়মিত রাজনৈতিক কর্মকণ্ডও পরিচালিত হচ্ছে। ফলে ছাত্রাবাসে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার যে স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় ছিল তা এখন হুমকীর সম্মুখীন।
৪. প্রশাসনিক দুর্বলতা ও ছত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়কের শারীরিক অসুস্থতায় দীর্ঘদিন অনুপস্থিতির কারণে ছাত্রাবাসের কোনো নিয়মনীতি শিক্ষার্থীরা পালন করছে না। যে যার খেয়াল-খুশি মতো হোস্টেলে যাওয়া-আসা করে। ইদানীং বহিরাগত কিছু উচ্ছৃঙ্খল ছেলেদেরও যাতায়াত লক্ষ করা যাচ্ছে।
৫. ছাত্রাবাসে আধুনিক কোনো খেলাধূলার সরঞ্জাম কিংবা চিত্তবিনোদনের কোনো সুব্যবস্থা নেই।
৬. ছাত্রাবাসটির পরিচালনা কমিটির কাছে এ সব বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে, কারো কাছেই কোনো সুস্পষ্ট উত্তর পাওয়া যায়নি।

সুপারিশ
১. জরুরি ভিত্তিতে ছাত্রাবাসের সংস্কারে প্রয়োজন। অন্যথায় যে কোনো সময় সমূহ বিপদের সম্ভবনা রয়েছে।
২. ছাত্রাবাসের সিটি সংখ্যা ১০০ থেকে উন্নীত করে ১৫০ করতে হবে।
৩. বহিরাগত এবং যারে ছাত্রাবাসে থাকার অনুমতি নেই সেসব ছাত্রকে ছাত্রাবাস থেকে বের করে দিতে হবে।
৪. সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য ছাত্রাবাসে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। ছাত্রাবাসের প্রশাসনিক নিয়মনীতি কঠোরভাবে পালন হচ্ছে কিনা সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।
৫. শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে ছাত্রাবাসের গেইট সন্ধ্যা ৮ টার মধ্যে বন্ধ করে দিতে হবে।
উল্লেখ্য যে ইতোমধ্যেই কলেজের ছাত্রাবাস সমস্যাকে কেন্দ্র করে সাধারণ ছাত্রছাত্রীর মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। মাননীয় অধ্যক্ষের কাছে তাদের প্রশ্ন হলো, ছাদ ভেঙে পড়ে যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে তবে এর দায়দায়িত্বকে নেবে? তাই যত দ্রুত সম্ভব এই সমস্যাটি ভয়াবহ আকার ধারণ করার আগেই সমাধান হোক, এটাই সকল ছাত্রছাত্রীর একান্ত প্রত্যাশা।
বিনীত প্রতিবেদন
‘খ’
অধ্যাপক, ব্যবস্থাপনা বিভাগ,
…কলেজ, কুমিল্লা।

আরও পড়ুন