বাংলা নববর্ষ রচনা
বাংলা নববর্ষ বাঙালি ঐতিহ্যের একটি বহমান ধারা। ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির এই ধারা অত্যন্ত প্রাচীন। নববর্ষ আর বাঙালির উৎসব আয়োজন যেন এক সুরে বাঁধা। বাদশাহ আকবরের নির্দেশে এবং তার বিজ্ঞ রাজ-জ্যোতিষি আমীর ফাতেহ উল্লাহ সিরাজীর অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলেই মূলত বাংলা সনের উৎপত্তি। বাংলাদেশে প্রথম বারের মত খ্রিস্টিয় সনের পাশাপাশি সরকারিভাবে বাংলা সন দেখার প্রচলন হয় ১৯৮৮ সালে। পহেলা বৈশাখ বাংলা সনের প্রথম দিন তথা বাংলা নববর্ষ। এ দিনটি বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গে নববর্ষ হিসেবে বিশেষ উৎসবের সাথে পালিত হয়। মূলত এটি বাঙালির একটি সার্বজনীন উৎসব। সারা বিশ্বের বাঙালিরা এ দিনে নতুন বছরকে বরণ করে নেয়। ভুলে যাবার চেষ্টা করে অতীত বছরের সকল দুঃখ-গ্লানি। সবার কামনা থাকে যেন নতুন বছরটি সমৃদ্ধ ও সুখময় হয়। বাংলাদেশে বাংলা নববর্ষ বেশ সমারোহের সাথে পালন করা হয়। ১৯৬৭ সাল থেকে রমনা বটমূলে সাংস্কৃতিক সংগঠন “ছায়ানট” বাংলা বর্ষ বরণের আয়োজন শুরু করে। বর্তমানে এ আয়োজনই বাংলা নববর্ষের মূল অনুষ্ঠান। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। এতে তুলে ধরা হয় বাঙালি সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক এবং ব্যবহার করা হয় প্রতীকি শিল্পকর্ম। এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে আয়োজন করা হয়- বৈশাখি মেলা, হালখাতা ও পুণ্যাহ, আমানি, বলি খেলা, লাঠি খেলা, ষাঁড়ের লড়াই, মোড়গ লড়াই, হা-ডু-ডু, নৌকা বাইচ ইত্যাদি। ঢাকায় বাংলা নববর্ষের একটি বিশেষ দিক হলো-পাঞ্জাবি, শাড়ি পড়ে ঘুরে বেড়ানো এবং মাটির সানকিতে করে সকালে পান্তা ইলিশ খাওয়া। বাংলা নববর্ষ বাঙালি জাতির একটি সার্বজনীন উৎসব।